পানি বিষয়ে সচেতনতা ও গুরুত্বকে তুলে ধরার জন্য সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২২ মার্চ ‘বিশ্ব পানি দিবস’ পালন হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশেও বিশ্ব পানি দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। এ বছর বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘হিমবাহ সংরক্ষণ, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও নিরাপদ পানির ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে’।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এক প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতিবছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেখানে পানিসম্পদের জন্য একটি বিশেষ দিন ঘোষণার দাবি তোলা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয় এবং তার পর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এ দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা প্রদানসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও পানিদূষণ কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তা যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ সংস্থাসমূহ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
দূষিত পানিতে জনস্বাস্থ্য হুমকিতে মুখে পড়ে। বিশ্বে প্রতি চার জন মানুষের মধ্যে এক জন নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে। দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অথচ দেশে নিরাপদ পানি পৌঁছানো গেছে ৫৯ শতাংশ মানুষের কাছে। দুর্গম এলাকা, গ্রামাঞ্চল ও শহরের বস্তি এলাকায় নিরাপদ পানি সহজে পাওয়া যায় না। পানিতে জীবাণু, আর্সেনিক ও লবণাক্ততা রয়েছে। এসডিজি লক্ষ্য পূরণ করতে হলে নিরাপদ পানির জন্য এখন কমপক্ষে চার গুণ সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে পানি এবং টেকসই উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পানি ছাড়া যেমন আমাদের জীবন অচল; তেমনি জলবায়ু ও প্রকৃতি যা আমাদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত তার স্বাভাবিক প্রবাহের জন্যও পানি অপরিহার্য। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পরিণত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘সবার জন্য নিরাপদ পানির নিশ্চিয়তা চাই’ -এ দাবিতে আজ বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বারসিক, বাংলাদেশ স্কাউট অ্যান্ড গাইড ফেলোশিপ, ছায়াতল বাংলাদেশ, লাইফ সার্ভবাংলাদেশ, গ্রিন ফোর্সের সমন্বিত উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
GIPHY App Key not set. Please check settings