সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলানের সঙ্গেই শুধু সম্পর্ক ছিল এ কথা আদালতে কাছে দাবি করেছেন মডেল মেঘনা আলম।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) তাকে আদালতে তোলা হয়। শুনানির সময় মেঘনার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না। তিনি নিজেই আদালতে কথা বলেন।
এর আগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় পুলিশের দায়ে করা এক প্রতারণা ও চাদাবাজির মামলায় মেঘনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একই মামলায় তার কথিত সহযোগী সানজানা ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সামিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে শুনানি করেন।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, এরা অভিনব কৌশল অবলম্বন করে বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ এ্যাম্বাসিগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের হানি ট্র্যাপে ফেলে বিপুল অর্থ বাগিয়ে নেয়ার জন্য চক্র দাঁড় করিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এসব প্রতারণা করে আসছে। সর্বশেষ সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকে ফাসানোর চেষ্টা করে তারা। তার কাছ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন।
আদালতে মেঘনার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত মেঘনার কাছেই জানতে চান, তিনি কিছু বলবেন কিনা। জবাবে মেঘনা আলম আদালতকে বলেন, ‘আমাদের কোনো আইনজীবী নেই।’ এরপর তিনি কথা বলতে অনুমতি চান।
আদালত অনুমতি দিলে মেঘনা বলেন, মামলায় বলা হয়েছে, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও এ্যাম্বাসিগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করার কথা। অন্য কোনো বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সম্পর্ক।
মেঘনা আরো বলেন, সৌদি রাষ্ট্রদূতের কথা বলা হচ্ছে…. আমার প্রশ্ন যে কেউ চাইলে কি সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে পারে? আপনারা কি তার কাছে যেতে পারবেন?
আদালত তাকে থামিয়ে মামলার বিষয়ে কিছু বলার আছে কিনা জানতে চাইলে মেঘনা বলেন, আমাকে বিনা বিচারে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, কোনো আইনজীবী পাবেন না।
মেঘনা আরও বলেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ঈসা অভিযোগ করেন, আমি নাকি তার বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছি— এটা মোটেও সত্য না। এ বিষয়ে ঈসার সঙ্গে কথা আমি বলি। এসব তথ্য ছড়ানো থেকে তাকে বিরত থাকতে বলি। এসব বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শফিকুরের সঙ্গে কথা বলি। এরপরেই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে শুনানি সময় দেওয়ান সামির আদালতকে বলেন, আমাকে মেঘনা আলমের বয়ফ্রেন্ড বলা হচ্ছে— এটা ভুল তথ্য। তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি সাধারণ একজন মানুষ। দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আমি মামলার এসব ঘটনার কিছুই জানি না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী গ্রেপ্তার দেখানোর যুক্তি তুলে ধরে আদালতে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বারবার ‘মেঘলা আলম’ উচ্চারণ করেন। এসময় মেঘনা তার নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, আমার নাম মেঘনা আলম, মেঘলা নয়।
শুনানি শেষে আদালত দুইজনকে গ্রেফতার দেখান। সামিরকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়ার নির্দেশ দেন।
GIPHY App Key not set. Please check settings