দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ২৬ জন। গুরুতর আহতদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। আগুনের ভয়াবহতায় ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহতদের বেশিরভাগই ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সী।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু একে ‘অবর্ণনীয় সংকট’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এটি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা রেকর্ড বই বদলে দিচ্ছে।
দাবানলে ঐতিহাসিক গাউনসা মন্দির পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এক হাজার ৩০০ বছরের পুরনো এই মন্দির ৬১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি দেশের অন্যতম প্রাচীন বৌদ্ধ উপাসনালয়। এছাড়া, জোসিয়ন রাজবংশের আমলের আরও একটি জাতীয় ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন ধ্বংস হয়ে গেছে।
শুক্রবার সাঞ্চেওং জেলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর এটি গিওংবুক, উইসিওং, আন্দং, চিয়ংসং, ইয়ংইয়াংসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শক্তিশালী বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন দমকল কর্মীরা।
পাঁচ হাজার সামরিক সদস্য, হাজারো স্বেচ্ছাসেবী ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। কিন্তু প্রবল বাতাস পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে।
উইসিওংয়ের পার্বত্য এলাকায় আগুন নেভানোর একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ এখনো তদন্তাধীন।
এই দাবানলে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর বনাঞ্চল পুড়ে গেছে, যা দেশটির ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম অগ্নিকাণ্ড। অনেক গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সরকার অগ্নিকাণ্ডের পেছনে অবৈধ কর্মকাণ্ড ও ব্যক্তিগত অবহেলার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় চলতি বছর ২৪৪টি দাবানল ঘটেছে, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
সূত্র: বিবিসি
GIPHY App Key not set. Please check settings